১০ ঘণ্টার ব্যবধানে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ভেসে এলো আরও তিনটি মৃত মা কচ্ছপ। রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের সোনারপাড়া সৈকতে একটি ও পাশের রেজুখালের মোহনায় একটি মৃত কচ্ছপ ভেসে আসে।
এর আগে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সোনারপাড়া সৈকতে ভেসে এসেছিল আরও একটি মা কচ্ছপ। এ নিয়ে গত চারদিনে ভেসে আসা নয়টি কচ্ছপের সবগুলোর পেটে ডিম ছিল।
অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের এসব সামুদ্রিক কচ্ছপ ডিম পাড়তে সৈকতের বালিয়াড়িতে আসার পথে মারা পড়েছে বলে ধারণা করছেন সমুদ্রবিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, অন্তত ১০-১২ দিনের মধ্যে কচ্ছপগুলো মারা পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ডিম পাড়তে আসা কচ্ছপের মৃত্যুর ঘটনা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে।
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সামুদ্রিক কচ্ছপের প্রজনন মৌসুম জানিয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে বা অন্য কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কচ্ছপগুলো মারা পড়ছে।
তিনি বলেন, রবিবার ভেসে আসা দুটি কচ্ছপের পেটে ২১৫টি ডিম পাওয়া গেছে। গতকাল সন্ধ্যায় আসা কচ্ছপটির পেটে ছিল ৯৫টি ডিম।
দুটি কচ্ছপের পেছনের দুটি এবং সামনের একটি ফ্লিপার বা সাঁতার কাটা পাখনা ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। আগে পাওয়া কচ্ছপগুলোর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার ও বৃহস্পতিবার ইনানী ও হিমছড়ি সৈকতে তিনটি ডলফিন এবং সুগন্ধা পয়েন্টে একটি বিপন্ন স্তন্যপায়ী পরপইসের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
কয়েকদিন ধরে ভেসে আসা মৃত সামুদ্রিক প্রাণীগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি বলেন, বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বোরির হিসাবমতে, জানুয়ারি থেকে রবিবার (১৮ ফেব্রিয়ারি) পর্যন্ত কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের সোনাদিয়া, হিমছড়ি, সোনারপাড়া, ইনানী ও টেকনাফ সৈকতে অন্তত ২৮টি মৃত কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়েছে।
চস/স