বিপণনকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ক্রেতাদের জন্য পণ্য ক্রয়ে বিশেষ ব্যবস্থাপনার বিষয় মাথায় রেখে সীমিত কর্মী দিয়ে আউটলেট চালু করবে আড়ং। ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের আড়ং ব্র্যান্ডের ২১টি আউটলেটের মধ্যে আজ থেকে ১৪টি খোলা থাকবে। তবে পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের আগে থেকেই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
গতকাল সকালে আড়ংয়ের নিজস্ব ফেসবুক পেজে এক ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা হাসান আবেদ, আড়ংয়ের চিফ অপারেটিং অফিসার মো. আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের কমিউনিকেশনস অ্যান্ড আউটরিচ প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মৌটুসী কবীর।
তামারা হাসান আবেদ বলেন, কভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর দোকান ও বাজার খোলার সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আড়ংয়ের ১৪টি আউটলেট আগামীকাল (আজ) থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে। ক্রেতার স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস এবং ঝামেলামুক্ত কেনাকাটার স্বার্থে দেশে প্রথমবারের মতো বিপণিকেন্দ্রে আসার আগে অনলাইন বুকিং চালু করছে আড়ং। তবে আমাদের সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রাজধানীর বাসাবো, যমুনা ও বসুন্ধরা শপিংমলের আউটলেটগুলো চালু করা হবে না। তাছাড়া যেখানে চালু হবে, সেখানে সরকারের যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো মানা হবে। পাশাপাশি ডিএমপি যে নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলোও পরিপালন করা হবে। আমাদের কর্মীদের সুরক্ষায় সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে জড়িত ৬৫ হাজারের বেশি হস্ত ও কারুশিল্পী এবং নারী উদ্যোক্তাদের জীবিকা। তাদের কথা মাথায় রেখেই আমরা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আড়ং আউটলেট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তামারা হাসান আবেদ বলেন, আড়ং বাংলাদেশের মানুষের একটি সম্মিলিত প্রয়াস। আড়ং কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নয়। আড়ংয়ের মুনাফা ব্র্যাকের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয়। আমাদের যে মুনাফা হয় তার অর্ধেক আমরা আড়ংয়ের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে ব্যয় করি। আর বাকি অর্ধেক ব্র্যাকের উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় হয়। দেশে দারিদ্র্য বিমোচনসহ ব্র্যাক যেসব উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে, তার একটি অংশ আসে আড়ংয়ের লভ্যাংশ থেকে।
এদিকে ক্রেতার স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাস এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিরাপদে কেনাকাটার স্বার্থে দেশে প্রথমবারের মতো বিপণিকেন্দ্রে আসার আগে অনলাইনে টাইমস্লট বুকিং চালু করল আড়ং। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে গিয়ে নিকটতম আউটলেটে কেনাকাটা করার জন্য তারিখ ও সময় বুকিং দিতে পারবেন যেকোনো ক্রেতা। এরপর নির্ধারিত সময়ে এসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে সহজেই কেনাকাটা সেরে নিতে পারবেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাসা থেকে কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য কর্মীদের আড়ংয়ের নিজস্ব গাড়ি দেয়া হবে, যেন তাদের গণপরিবহন ব্যবহার করতে না হয়।
আরো পড়ুন: দেশে একদিনে রেকর্ড ৮৮৭ জনের করোনা শনাক্ত
চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আড়ংয়ের প্রত্যেকটি আউটলেটে সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য সব সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ অনুসরণ করা হবে। ক্রেতারা যাতে নিরাপদে ও ঝামেলামুক্তভাবে কেনাকাটা করতে পারেন, সেজন্য সারা দেশে সবগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ভিত্তিক কেনাকাটার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই কঠিন সময় পেরিয়ে আসতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার আড়ংয়ের কোনো পণ্য ট্রায়াল করার সুযোগ থাকছে না এবং পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়কৃত পণ্য পরিবর্তন করা যাবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে বিদ্যমান ‘পণ্য পরিবর্তন নীতি’ অনুযায়ী ৩০ দিন গণনা শুরু হবে এবং এর মধ্যে পণ্য পরিবর্তন করা যাবে।
বুকিংয়ের পর ক্রেতা শপিংয়ে আসার জন্য যে সময় নির্ধারণ করবেন, তার অন্তত ১০ মিনিট আগে আউটলেটের সামনে উপস্থিত হবেন। ১০ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। আউটলেটে প্রবেশের আগে তাদের জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে এবং থার্মাল স্ক্যানারে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। কারো মুখে মাস্ক না থাকলে কিংবা শরীরের তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকলে তিনি প্রবেশের অনুমতি পাবেন না।
চস/সোহাগ