spot_img

২৭শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, রবিবার
১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সর্বশেষ

অতিবৃষ্টি ও ভূমিধসে ভারতের হিমাচলে ৪৪৯ রাস্তা বন্ধ

ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যটি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে মান্ডি জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭৯ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

রাজ্যের জরুরি অবস্থা পরিচালনা কেন্দ্র (স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার বা এসইওসি) জানিয়েছে, এই ভারী বৃষ্টির কারণে মান্ডি জেলার সেরাজ অঞ্চলে নদী ও খালের পানির স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে ৪৪৯টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৯৫টি রাস্তা মান্ডি জেলায়।

মান্ডি জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধস এবং বন্যার সম্ভাবনা নিয়ে কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করেছে। এই অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টির ফলে নদী ও খালের পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়াও, মান্ডি-ধরমপুর রাস্তা (এনএইচ ৩) এবং অট-সাইঞ্জ রাস্তা (এনএইচ ৩০৫) ভূমিধসের কারণে বন্ধ রয়েছে। কিন্নর জেলার রিব্বা নালায় আকস্মিক বন্যার কারণে পুরনো হিন্দুস্তান-তিব্বত রাস্তা (এনএইচ ৫) যান চলাচলের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।

মান্ডি জেলার বাল্হ উপত্যকার দাদুর এলাকায় কিরতপুর-মানালি ফোর-লেন রাস্তায় সঠিক পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার অভাবে কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল কুমার জানিয়েছেন, “প্রতি বছর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে বাড়িগুলোতে পানি ঢুকে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই) বারবার জানানো সত্ত্বেও কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।” এদিকে, উনা জেলার মেহতপুর শহরে একটি নালা উপচে পড়ায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে একজন ব্যক্তি ভেসে গেছেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে, তবে এখনও নিখোঁজ ব্যক্তির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

রাজ্যের বিভিন্ন অংশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মান্ডি জেলায় ১৭৯.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা সবচেয়ে বেশি। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বুধবার, শুক্রবার এবং শনিবার দুই থেকে তিনটি জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ জুন পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে বৃষ্টি-সম্পর্কিত ঘটনায় ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২০ জন ডুবে মারা গেছেন, ১৯ জন উচ্চতা থেকে পড়ে, ১৭ জন মেঘভাঙা বৃষ্টিতে, ৯ জন আকস্মিক বন্যায় এবং ৬ জন ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও, ৩৬ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

মান্ডি জেলার বাসিন্দাদের ভূমিধস-প্রবণ এলাকায় ভ্রমণ এড়াতে এবং আবহাওয়ার সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

হিমাচল প্রদেশের এই চলমান সংকটে স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করে চলেছে। তবে, অবিরাম বৃষ্টি এবং ভূখণ্ডের অস্থিরতার কারণে উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

চস/স

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss