তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে সুপার টাইফুন ‘রাগাসা’র তাণ্ডবে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭ জন।
শুক্রবারও উদ্ধারকর্মীরা হাঁটু ও কোমর-সমান ঘন কাদার মধ্যে নিখোঁজদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত মঙ্গলবার টাইফুনের সময় হুয়ালিয়েন কাউন্টিতে পাহাড়ি এলাকায় তৈরি হওয়া একটি প্রতিবন্ধক-হ্রদ টানা বৃষ্টিতে উপচে পড়ে। মুহূর্তেই পানির সঙ্গে নেমে আসে ঘন কাদার দেয়াল, যা গুয়াংফু শহরকে গ্রাস করে।
বন্যার পানি সরে গেলেও এখনও বিশাল এলাকা কাদায় ঢেকে আছে। এতে উদ্ধারকাজের পাশাপাশি স্থানীয়দের জীবনযাত্রায়ও নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
উদ্ধারকারীরা ঘরবাড়ির ছাদ কেটে ভেতরে প্রবেশ করে নিখোঁজদের খুঁজছেন। স্থানীয় হুয়াং নামের এক ব্যক্তি জানান, কাদায় ভরা ঘরের ভেতরে তার বড় বোনের মৃত্যু হয়েছে।
“ভেতরটা পুরোপুরি কাদা দিয়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। তাকে বের করার কোনো উপায় ছিল না,” বলেন তিনি।
সরকারি নির্দেশানুযায়ী, উপরের তলায় যেতে না পারায় অনেক বয়স্ক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে কেউ কেউ অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন।
৮৮ বছর বয়সী হুয়াং জু-হসিং নিজের মুদি দোকানের উপরে আটকা পড়েছিলেন। তার স্ত্রী চ্যাং শুয়ে-মেই বলেন, “বের হওয়ার কোনও সময় ছিল না। আমরা তাকে বলেছিলাম দ্রুত ওপরে উঠে যেতে। জরুরি পরিস্থিতিতে মানুষ হঠাৎ সব সাহস খুঁজে পায়।”
তাইওয়ানের দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ লু জিং-চিয়েন জানান, এ বন্যা ছিল অস্বাভাবিক। কারণ, পানিতে বিপুল পরিমাণ বালি ও কাদা মিশে নেমে এসেছিল, যা দ্রুত এবং প্রচণ্ড শক্তিতে শহরে আঘাত হানে।
পর্বতময় ও কম জনবসতিপূর্ণ গ্রামীন পরিবেশের হুয়ালিয়েন পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। তবে এই দুর্যোগ দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে থাকা তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে প্রভাবিত করেনি।
চস/আজহার