চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (প্রাক্তন আম গবেষণা কেন্দ্র) বিজ্ঞানীদের ১৫ বছরের গবেষণায় উদ্ভাবিত আমের ৩টি নতুন জাত অবমুক্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ড এসব জাত অবমুক্তের অনুমোদন দিয়েছে। নিবন্ধিত জাত ৩টির নাম দেয়া হয়েছে বারি আম-১৫(সৌদামিনি),বারি আম-১৬ ও বারি আম-১৭।
নতুন ৩টি জাতেরই প্রধান বৈশিষ্ঠ্য এগুলি নাবি জাতের(মৌসুমের শেষের দিকে ফল পাকে) ও উচ্চফলনশীল।এগুলি দেশের সর্বত্রই চাষ করা যায়। প্রতিটিরই গড় ওজন আধা কেজির উপরে। প্রতি মৌসুমেই নিয়মিত প্রচুর ফল আসে। ফলের মিষ্টতা ও স্বাদ চমৎকার । ফল রসালো ও আঁশবিহীন। এছাড়া জাতগুলিতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমন তেমন নেই। সংরক্ষণ মেয়াদও যথেষ্ট। জাত ৩টির ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই আশাবাদী ফল বিজ্ঞানীরা।
বারি আম-১৫ (সৌদামিনি)–এর গড় ওজন ৬৮০ গ্রাম। উচ্চফলনশীল, নিয়মিত ফল দানকারী ও নাবিজাত। সংগ্রহকাল জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। পাকলে ফলের ত্বকের রং হলুদাভ সবুজ, শাঁসের রং হলুদ। রসাল এই আম আঁশবিহীন। ভক্ষণযোগ্য অংশ ৮২ দশমিক ৩৫ ভাগ। রোগবালাই তেমন নেই। বাংলাদেশের সর্বত্র চাষ করা যাবে।
বারি আম-১৬–এর গড় ওজন ৫৭১ গ্রাম। সংগ্রহকাল জুলাই থেকে আগস্টের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। পাকা আমের ত্বকের রং হালকা কমলা। শাঁস কমলা রঙের। রসাল ও আঁশবিহীন। এ আমও বাংলাদেশের সব স্থানেই চাষ করা যাবে।
বারি আম-১৭–এর আকার গোলাকার। গড় ওজন ৬৫০ গ্রাম। ভক্ষণযোগ্য অংশ ৮৮ দশমিক ৪৬৭ ভাগ। সংগ্রহকাল জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। রোগ ও পোকামাকড় তেমন নেই।
নতুন তিনটি জাতের আম উদ্ভাবনের কাজে দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জমির উদ্দীন। একটি রঙিন জাতের আমের পর এবার একযোগে তিনটি নতুন জাতের আম অবমুক্ত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত জমির উদ্দীন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড.হরিদাস মোহন্ত বলেন, ‘এই কেন্দ্রে ১০ থেকে ১৫ বছর গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে জাতীয় বীজ বোর্ড নতুন তিনটি জাতের আম অবমুক্তের অনুমোদন দিয়েছে। একযোগে অবমুক্ত হওয়ায় আমরা দারুণ উৎসাহিত বোধ করছি। আমাদের বিশ্বাস, আমপ্রেমীরা পছন্দের তালিকায় তিনটি আমকেই সাদরে স্থান দেবেন। আমচাষিরাও লাভবান হবেন।’
চস/আজহার