অফিসের অসমাপ্ত কাজটুকু সময়ের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয় কমবেশি সবাইকেই। কেউবা অফিসের অসমাপ্ত কাজটুকু নিয়ে আসেন সঙ্গেই। এতে স্বভাবতই রাত জেগে সেই কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। দিনের পর দিন এভাবে রাত জেগে কাজ করার অভ্যাস থাকলে তা শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ঘুমানোর রুটিন বদলে যায়। সেই সঙ্গে ক্ষুধা নষ্ট হওয়া, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়ার মতো নানা উপসর্গ দেখা দেয়। অন্যদিকে শরীরের পাশাপাশি পারিবারিক জীবনেও টানপোড়েনের আশঙ্কা থাকে। তাই অফিসের কাজ অফিসেই সেরে ফেলার পরিকল্পনা করুন আগে থেকেই। জেনে নিন কীভাবে অফিসের পুরো সময়টা কাজে লাগাতে পারেন, এতে পরিবারের সময়টা বরাদ্দ থাকবে শুধুই পরিবারের জন্য।
কাজের সুনির্দিষ্ট রুটিন
আজকের দিনে আপনার হাতে কী কী কাজ আছে, আর কোন কাজগুলো আজই সেরে ফেলতে হবে তার একটা তালিকা বানিয়ে রাখুন আগের রাতে। যদি হাতে অনেক কাজ জমে থাকে, তাহলে রাত না জেগে বরং ভোরবেলা উঠুন। সকালের দিকে এনার্জি লেভেল বেশি থাকে, আর চারপাশটাও নিরিবিলি থাকে। ফলে তখন মন দিয়ে কাজ করতে পারবেন।
আগের কাজ আগে
সহজ একটা মূলমন্ত্র মেনে চলুন- আগের কাজ আগে করা। কোন কাজটা আগে জমা দিতে হবে, কোনটা দুদিন পরে দিলেও চলবে, সেটা প্রথমেই ঠিক করে নিন। এবার প্রতিটি কাজের জন্য সময় বেঁধে নিন মনে মনে এবং চেষ্টা করুন সেই সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করতে। তাতে অনেকটা এগিয়ে থাকতে পারবেন।
কাজ নিয়ে বসে থাকা একদম না
একটু দেখি তো ফেসবুকে কী হচ্ছে, কিংবা মেসেঞ্জারে কে ডাকল দেখে নিই, এমন চিন্তা কাজের মাঝে আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন চিন্তাকে প্রশ্রয় না দিয়ে হাতের কাজটুকু শেষ করার ব্যাপারে মনোযোগী হোন। কাজের ফাঁকে অনেকেরই একটু গেম খেলা কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারার অভ্যাস থাকে। হালকা ব্রেক নিতে একটু-আধটু এসব করতেই পারেন, কিন্তু এটাই যেন নিয়ম হয়ে না যায়! তাহলে কিন্তু সময় নষ্ট হবে আর কাজের বোঝা বাড়তেই থাকবে! সারা দিনে ওয়ার্কিং আওয়ারের মধ্যে পনেরো মিনিটের বেশি সোশ্যাল মিডিয়া বা গেমের পেছনে নষ্ট করবেন না! বরং দ্রুত কাজগুলো সেরে ফেলুন, তারপর ইচ্ছেমতো অবসর কাটান।
আগে সারুন জটিল কাজ
হাতে জমা হওয়া কাজগুলোর মধ্যে কোনটা কিছুটা কঠিন কোনটা আবার ঝটপট সেরে নেয়া যায়। আগে ভাগ করে ফেলুন কোনটা কোন ধররেন কাজ। এরপর সহজ কাজগুলো পরে করার জন্য রেখে দিন। অপেক্ষাকৃত সময়সাপেক্ষ কাজ বা যে কাজ করতে অপরের সাহায্য প্রয়োজন, সেগুলো আগে শেষ করুন। তাতে মাথা থেকে বোঝা নেমে যাবে, সহজ কাজগুলো চটপট করে ফেলতে পারবেন।
‘না’ বলতে শিখুন
অনেক সময়ই আমাদের সহকর্মীরা নিজেদের কাজ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেন। সব ক্ষেত্রে না বলা সম্ভব নয়, কিন্তু প্রয়োজনে অবশ্যই ‘না’ বলুন। হাতে খুব বেশি কাজের চাপ থাকলে আগে সেটাই শেষ করা আপনার দরকার, সহকর্মীকে পরেও সাহায্য করতে পারবেন।
চস/আজহার