spot_img

২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শনিবার
১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়েছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি বলেছিল সরকারের পতন ঘটাবে, ১০ তারিখের পর থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। তারা সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়েছে। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি মনে করেছেন সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভীত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছে সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করেছে। সামনে উপনির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কি ভুলটি তারা করেছেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এমন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে কেউ ধাক্কা দিলে সেই নিচে পড়ে যায়। কঠিন দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেওয়ালের যেমন কিছু হয় না, উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই মাথায় ব্যথা পায়। তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে।

বিএনপি বলেছিল, ১০ ডিসেম্বর তাদের ১ দফা দাবি। আর সমাবেশে তারা দিল ১০ দফা দাবি। তাদের দাবিগুলো মনযোগ দিয়ে পড়লাম। দাবিগুলো ঘোড়ার ডিমের মতই দশটা ঘোড়ার ডিম, নতুন কোন কিছু সেখানে নাই। ১ দফা থেকে এখন দশ দফায় গেছে। গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতোই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অনেক হিসেব নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন দশ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেষ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেল পনেরটি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোটা। তার মানে হচ্ছে তারা আসলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর জন্য নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।

তিনি বলেন, ৭ তারিখ থেকে সমাবেশ শুরু করে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করল। যখন সরকার কঠোর হল তখন আবার বসল, তারা বেছে নিল গোলাপবাগ মাঠ। সেখানে চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটের মত গরুর হাট বসে। এত ময়দান থাকতে তারা বেছে নিল গরুর হাটের ময়দান। পঞ্চাশ হাজার বর্গফুটের এই ময়দানে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ ধরে। আশপাশের রাস্তা মিলিয়ে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার মানুষের সমাবেশ করলেন তারা।

চট্টগ্রামের মানুষ বারবার আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগে থেকেছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পাখি শিকার করার মতো করে মানুষ শিকার করে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার চেষ্ঠা করা হয়েছিল। চট্টগ্রামের ৩২জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সেদিন জীবন দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৯২তম, অথচ পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়। বাংলাদেশে এখন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায়না। চেঁড়া খাপড় পড়া মানুষ সহজে দেখা যায়না, আকাশ থেকে কুঁড়েঘর সহজে খুঁজে পাওয়া যায়না। এটিই হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোন যাদুর কারণে হয়নি, শেখ হাসিনার যাদুকরি নেতৃত্বের কারণে এইভাবে বাংলাদেশ বদলে গেছে।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন নদভী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

চস/এস

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss