spot_img

৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ

বিপিএলে শুধুই বিসিবির কোচ

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বিপিএলের। ফ্র্যাঞ্চাইজি বাদ দিয়ে হচ্ছে টুর্নামেন্টের সপ্তম আসর। ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার আনা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। গত পরশু আবার একগাদা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে হযবরল করে ফেলেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। একজন করে লেগস্পিনার খেলানো এবং চার ওভার বল করা বাধ্যবাধকতা রেখেছে তারা। বিসিবির টাকায় টুর্নামেন্ট হওয়ায় সব দলেরই প্রধান কোচ থাকবে বিদেশি। দেশের কোচদের রাখা হবে সহকারী হিসেবে। তারাও নিয়োগ পাবেন বিসিবির চাকরিজীবী কোচদের থেকে। সেক্ষেত্রে বোর্ডের বাইরে থাকা দেশি কোচরা বিপিএলে কাজের সুযোগ পাবেন না।

বিপিএলের প্রথম আসর থেকেই দেশি-বিদেশি কোচরা কাজ করছেন। দেশি কোচের অধীনে দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ২০১৫, ২০১৭ এবং ২০১৮ বিপিএল আসরে ভিক্টোরিয়ান্সের প্রধান কোচ ছিলেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এ ছাড়া ২০১৪ সালে সিলেট সিক্সার্স ও ২০১৬ সালে চিটাগং ভাইকিংসের কোচ হিসেবে সেমিফাইনাল খেলার রেকর্ড আছে তার। বিসিবির কোচ মিজানুর রহমান বাবুল ২০১৬ সালে কুমিল্লার প্রধান কোচ ছিলেন। টুর্নামেন্টের বর্তমান রানার্সআপ ঢাকা ডায়নামাইটসের প্রধান কোচ ছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টে কোচ মাহমুদেরও ভালো রেকর্ড আছে।

সারওয়ার ইমরানও একাধিকবার ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের প্রধান কোচ ছিলেন। অথচ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য ও বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বিপিএলে দেশি কোচদের অংশগ্রহণ খুব একটা দেখেন না, ‘আগে যে ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল সেখানে কয়জন লোকাল কোচ ছিল? খালেদ মাহমুদ সুজন ছাড়া তেমন একটা লোকাল প্রধান কোচ তো দেখিনি।’

জালাল ইউনুস দেশের একজন সাবেক ক্রিকেটার ও পুরনো সংগঠক। তার দৃষ্টিতে বিদেশি কোচদের সঙ্গে থেকে শেখার সুযোগ পাবেন দেশিরা, ‘বাংলাদেশের কোচদের ওই লেভেলে যেতে সময় লাগবে। তাই বলে তাদের দূরে ঠেলে দেওয়া হবে, তা না। তাদেরও সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য একজন বিদেশি কোচের ডেপুটি করা হবে একজন দেশি কোচকে। তবে বিদেশি কোচ কয়জন পাচ্ছি তার ওপরও নির্ভর করবে। বিদেশি কোচ হলেই তো হবে না। ভালো মানের হতে হবে।’

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া বিপিএলে বিদেশি কোচদের সহকারী করা হবে বিসিবির নিয়োগ দেওয়া কোচদের থেকে। কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে জালাল ইউনুস বলেন, ‘সাতটা দলে সাতজন বিদেশি কোচ নিয়োগ দেব, এটাতে কোনো নড়চড় হবে না। সঙ্গে ডেপুটি কোচ বিসিবি থেকে নিয়োগ পাবে।’ তবে বিসিবির বাইরে থাকা দেশি কোচদের নিয়েও আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি, ‘আমরা যখন দল নিয়ে বসব, তখন যারা দেশি কোচ আছে তাদের নাম প্রস্তাব করা হবে। এখনই বলা মুশকিল।’

তবে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার কর্মকর্তাদের এমন বিমাতাসুলভ আচরণে হতাশ চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ সালাউদ্দিন, ‘বাংলাদেশের একজন কোচ হিসেবে সত্যিই অপমান বোধ হচ্ছে। খুবই হতাশাজনক একটা সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের ফলে যেটা মনে হতে পারে দেশে একজনও মানসম্পন্ন কোচ নেই। শুধু তো কোচ না, সব ফিজিও এবং ট্রেনারও বিদেশ থেকে আনা হবে!’

দেশি কোচদের এভাবে হেলা করাতে খুশি নন বিসিবি পরিচারক খালেদ মাহমুদ সুজনও। জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দু’বার দায়িত্ব পালন করা মাহমুদ বলেন, ‘আমি আশা করব, বিসিবি বিষয়টি নিয়ে ভাববে। এমন তো নয় যে, দেশে কোচ নেই। অনেকেই বিপিএলের সঙ্গে কাজ করেছে। স্থানীয় কোচদের সাফল্যও আছে।’ আর ক্রিকেটারদের স্যার হিসেবে পরিচিত কোচ সারওয়ার ইমরান অল্প কথাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের হযবরল অবস্থা, ‘বিসিবির এই সিদ্ধান্তে আমি বিস্মিত। তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতেই পারে, কিন্তু সেটা জনসম্মুখে এভাবে না বললেও পারত।’ এই সিদ্ধান্তের পর প্রশ্ন উঠেছে, বোর্ডের কর্মকর্তারা কি অতিমাত্রায় বিদেশিনির্ভর হয়ে পড়ছেন। তাহলে উদীয়মান কোচ আফতাব আহমেদরা কোথায় যাবেন।

চস/আজহার

Latest Posts

spot_imgspot_img

Don't Miss