প্রেনিউর ল্যাব এবং ফ্রেডরিক নওমান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডমের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছিল “ফিউচার অফ মিডিয়া সামিট” । সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গুলশানের লেকশোর হোটেল। “ফিউচার অফ মিডিয়া সামিট” এর সফলতা উদযাপনে এবং বাংলাদেশ এর মিডিয়া এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা এর উদ্দেশ্যে আজ এই সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সামিটে অংশগ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের নানান মিডিয়া প্রফেশনাল, শীর্ষ সাংবাদিকগণ, পলিসি মেকারস, তরুণগোষ্ঠী।
গণমাধ্যম একটি সমাজের দর্পণস্বরূপ। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। বলা হয়ে থাকে “গণতন্ত্রের মেরুদন্ডই হচ্ছে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং দায়িত্বশীল গণমাধ্যম”। কাজেই সমাজের নিকট গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতা বর্ণনাতীত। সমাজের অগ্রগতিতে গণমাধ্যমের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ প্রকৃত সত্যের উন্মোচন, সঠিক সংবাদ পরিবেশন এবং অসামঞ্জস্যতার সমালোচনা। সাধারণ মানুষের জীবনে গণমাধ্যমের প্রভাব এতই বেশি যে এটি তাদের সামাজিক ধ্যান ধারণা, বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি, সংস্কৃতি এমনকি ঐতিহ্যের পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলতে সক্ষম। সময়ের শুরু থেকেই সমাজ এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বিবর্তনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সমাজের বিবর্তন থেকে শুরু করে সময়ের বিবর্তনের মধ্যে গণমাধ্যম নিজেও অনেক বিবর্তনের ধারা অতিক্রম করেছে। একটা সময় কবুতর ছিল সংবাদ মাধ্যমের অংশ। পরবর্তীতে অনেক বিবর্তনের পর, বৈদ্যুতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে, একটা বড় সময় ছাপানো সংবাদ মাধ্যম দখল করেছিল গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য স্থান। বৈদ্যুতিক গণমাধ্যমের প্রচলনের পর থেকে গণমাধ্যম এখন আরো বেশি মানুষের হাতের মুঠোয় এসে গিয়েছে এবং যে কোন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌছানো আরো সহজ হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে নতুন নতুন ধরণের গণমাধ্যমেরও বিকাশ ঘটছে এবং মোবাইল জার্নালিজম তার ভিতর একটি।
“ফিউচার অফ মিডিয়া সামিট” এর উদ্দেশ্যয় ছিল বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মী এবং তরুণ সাংবাদিকদের ভবিষ্যতের পরিবর্তনশীল গণমাধ্যমের এর জন্য প্রস্তুত করা। এরই উদ্দেশ্যে এই সামিটের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল নানান কার্যক্রম, যেগুলো ছিল ডিজিটাল ভেরিফিকেশন ওয়ার্কশপ, মোবাইল জারনালিজম ওয়ার্কশপ, মিডিয়া প্রতিকূলতা এবং মিডিয়া এর ভবিষ্যৎ নিয়ে রাউন্ড টেবিল আলোচনা, মিডিয়ায় কিভাবে উদ্ভাবনী ব্যাবস্থা আনা যায় তা নিয়ে কনফারেন্স।
সামিটটি শুরু হয়েছিল ২২শে জুন ২০২১ এ। ভবিষ্যতের সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সমাপনী সন্ধ্যায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনাব জাফর সোবহান, সম্পাদক, ঢাকা ট্রিবিউন । প্যানেল সেশনে আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এ এফপি ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, একাত্তর টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাদিয়া শারমিন, চ্যনেল ২৪ এর সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার মিনহাজ উদ্দিন রাহাত এবং তথ্য প্রযুক্তি সাংবাদিক ও লেখক রাহিতুল ইসলাম রুয়েল। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব রিয়াজুল ইসলাম রাব্বি, চ্যানেল২৪, তাসমিয়া নুহাইয়া, আওয়ার টাইমস এবং জান্নতুল ইসলাম রাহাদ, ডেইলি সান সহ অনেকেই । সামিটের সব তথ্য তুলে ধরেন এফ এন এফ বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব ওমর মুস্তাফিজ । সমাপনি বক্তব্য রাখেন ফ্রেডরিক নওমান ফাউন্ডেশন এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডঃ নাজমুল হোসেন ।
প্রেনিউর ল্যাব ইয়ুথ এন্ড ইনোভেশন ট্রাস্ট এর ট্রাষ্টি মোহাম্মদ আরিফ নিজামী বলেন, “বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্বে ফেইক নিউজ এবং মিসইনফরমেশন বেড়েই চলছে, ডিজিটাল মিডিয়া তে পাঠকের আগ্রহ বাড়ছে এবং এই অবস্থায় সাংবাদিকদের সঠিক খবর পাঠকের কাছে তুলে ধরা এবং ভবিষ্যৎ পরিবর্তনশীল গণমাধ্যমের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্যই আমরা সামিটের এই উদ্যোগটি নেই।”
“ফিউচার অফ মিডিয়া সামিট” এর এই যাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন ৩০০ এর ও অধিক সাংবাদিক, ৪০ জন স্পীকার । উক্ত সামিট বাংলাদেশের ১০০০০০ মানুষের কাছে পৌঁচেছে। উপরোন্ত এই কার্যক্রমের আয়তায় ছিল ১৫ টি এক্সপার্ট ভিডিও সিরিজ ।
চস/আজহার