বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪৫ শতাংশেরও বেশি পুষ্টিহীন বা অতিরিক্ত ওজন ও গুরুতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মুখে রয়েছে। আর বাংলাদেশে শিশু পুষ্টির জন্য জলবায়ু পরিবর্তন একটি বড় হুমকি। এমনটাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-এর নতুন এক প্রতিবেদনে।
দুনিয়াজুড়ে একই বয়সের শিশুদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ এ ধরনের সংকটের মুখে রয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় অর্ধেক শিশু এমন ঝুঁকিতে রয়েছে।
এ তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ায় ওপরের সারিতে রয়েছে ভারত। দেশটিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫৪ শতাংশই অপুষ্টির শিকার। উদ্বেগের বাইরে নেই বাংলাদেশও। জলবায়ু পরিবর্তনকে বাংলাদেশের শিশু পুষ্টির জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য, নগরায়ন এবং চিনি ও চর্বিযুক্ত আধুনিক ডায়েটের মতো উপাদানগুলোকে এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এক কোটি ৯০ লাখেরও বেশি শিশু জলবায়ু পরিবর্তন বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে।
বন্যার ভয়াবহতা ও নদী তীর ভাঙনের ফলে পরিবারগুলো শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। সেখানে লোকজনের উপচেপড়া ভিড় বিরাজ করে। এসব বস্তিতে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি পরিষেবার অভাব রয়েছে। ফলে শিশুরা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাবে ভুগছে।
চরম জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনা যেমন খরা ও বন্যার ফলে কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যা ও খরায় ফলন কমে গিয়ে খাবারের দাম বেড়ে যায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দরিদ্র পরিবারগুলো।
ছবি: ইউনিসেফ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এ বছর তার জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও অ্যাকশন পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্ব শুরু করবে। এই কৌশলটি দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের চাহিদার ওপর আরও বেশি জোর দেবে। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে রক্ষা করে শিশু পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা এবং অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিতের ওপর জোর দেওয়া হবে।
দুনিয়াজুড়ে দরিদ্র শিশুরাই অপুষ্টির সবচেয়ে বড় শিকার। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, গত কয়েক দশকের প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক যাবতীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা এই মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে ফেলেছি যে, শিশুদের খাবার স্বাস্থ্যকর না হলে তাদের জীবনযাপনও স্বাস্থ্যকর হয় না।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শিশু ও তরুণ-তরুণীরা বেঁচে থাকলেও অপুষ্টিজনিত কারণে তাদের জীবনমানের খুব কমই উন্নতি হচ্ছে।
চস/আজহার