দীর্ঘ ৩৩-দিন সোমলিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়া ২৩ নাবিক মুক্তি পেয়েছে আজ। মুক্তির পর নিজের অনুভূতি জানিয়ে ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করেছেন নাবিক মো. আসিফুর রহমান।
চট্টগ্রাম সময়ের পাঠকদের জন্য নাবিক আসিফুর রহমানের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:-
আসসালামু আলাইকুম। সোমালিয়া জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া নাবিক বলছি।
আল্লহামদুলিল্লাহ আজ(১৪ই এপ্রিল,রাত ০০.০৮ লোকাল টাইম )আমরা সোমালিয়া বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি।বর্তমানে আমরা ইতালির পতাকাবাহী নৌ-বহর কে সাথে নিয়ে সোমালিয়া থেকে দুবাইয়ের হামরিয়া পোর্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি।
দীর্ঘ ৩৩-দিন সোমলিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আতঙ্কে দিনপার করেছি। মৃত্যুকূপি এই পরিবেশে থেকেও সব কিছু মানিয়ে নিয়ে চলার চেষ্টা করেছি। আল্লাহ কাছে শুকরিয়া আদায় করি জীবনের এই কঠিনতম সময়ে তিনি ধর্য্য ধারণ করার তৌফিক দিয়েছেন।
আজ আমরাদের প্রকৃত ঈদ। তবে গত ১০ই এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে আমরা ঈদ পালন করি।সোমালিয়া একটি মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় তারা আমাদের প্রতি কিছুটা হলেও সহানুভূতি দেখায়।যে কারণে দস্যুদের কাছ থেকে আমরা জামাতে ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি পায়। সেইদিন আমরা কিছুটা হলেও খুশি ছিলাম এটা ভেবে যে, দ্বিতীয় রমজানে আমরা যখন ধরা পড়ি তখনো আমরা সঙ্কায় ছিলাম যে আমাদের জীবন আর কখনো ঈদ আসবে কিনা।তবে এতোকিছুর পরও আল্লাহ আমাদের কবুল করেছেন। আমদের সেই হাস্যউজ্জল ছবি তারই প্রমাণ করে। যদিও এই ছবি দেখে অনেকের মনে অনেক বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে তবে এই ছবি আমাদের প্রত্যেকের পরিবারের মনে স্বস্তি ফিরিয়েছে।
আমি আমার পরিবার-পরিজন,আত্মীয়-স্বজন,বন্ধুমহল, চেনা-অচেনা সকালে কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ,যারা আমদের মুক্তির আশায় দোয়া করেছেন। একি সাথে বাংলাদেশ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে নৌ-পরিবন মন্ত্রণালয় এবং আমাদের কে.এস.আর.এম গুরূপের মালিকপক্ষের অক্লান্ত পরিশ্রম-প্রচেষ্টার ফলে আমরা খুব অল্প-সময়ের মধ্যে এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি।আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।
এখন শুধু আমাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষা।
বিঃদ্রঃ গত ১২ই মার্চ মুজাম্বিক থেকে দুবাই যাওয়ার পথে সোমালিয়ায় জলদস্যুরা বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি.আব্দুল্লাহ সহ ২৩নাবিকে ছিনতায় করে।
(ফেসবুক থেকে নেওয়া)
চস/আজহার