আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের ওপর জমা হওয়া আবেদনের ওপর শুনানিকালে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটেছে।
আজ রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এই শুনানি শুরু হয়। শুনানিকালে বেলা ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহর অভিযোগ, তিনিসহ তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলা চালিয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও তাঁর সঙ্গে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীরা। আতাউল্লাহর দেখানো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রুমিন ফারহানা স্টেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। পেছন আতাউল্লাহ নিচে পড়ে আছেন। তাঁকে কয়েকজন লাথি-কিল-ঘুষি দিচ্ছেন।
আতাউল্লাহ বলেন, ‘শুনানিতে রুমিন ফারহানা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। কিন্তু যখন আমি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে যাই, তখন রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে স্টেজ দখলে নেন। পরে তাঁর নেতা-কর্মীরা আমাকে ফুটবলের মতো লাথি দেওয়া শুরু করে। যেভাবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ক্যাম্পাসে পিষতো, সেভাবে সবার সামনে আমাকে নিচে ফেলে পিষছে। আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলেছে। হাতে আঘাত করা হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশন তখন কী করেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এই নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন তখন আর কাউকে কথা বলতে দেয়নি। বিএনপি ছাড়া শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীকেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এনসিপির নেতাদের অভিযোগের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘মুশকিলের বিষয় হচ্ছে তিনি (আতাউল্লাহ) পরিচিত মুখ নন। তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, আমি জানি না। তবে উনি (আতাউল্লাহ) প্রথম, সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপর আমার লোকজন তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন মহিলা। এবং পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে। এটা সিম্পল।
’শুনানি শেষে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, আমি মনে করেছি আমার কেস আমি নিজেই প্রেজেন্ট করব। সো, আমার কেস আমি প্রেজেন্ট করেছি। আশা করেছিলাম নির্বাচন কমিশনের সম্মানের দিকে তাকিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এ যারা আছে তারা গুন্ডা-পান্ডা নিয়ে ঢুকবে না নির্বাচন কমিশনে। আনফরচুনেটলি, আমি দেখলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এ যিনি প্রার্থী তিনি তার দলবল ২০/২৫ জন মিলে গুন্ডা-পান্ডার মতন আচরণ করলেন। অত্যন্ত দুঃখজনক, অত্যন্ত লজ্জাজনক এবং আমি মনে করি এটা কমিশনের যে ভাবমূর্তি, যে গাম্ভীর্য এবং যে সম্মান—সেইটার সঙ্গে এটা যায় না। যে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়াই করেছি, তাঁরা এখন আমাকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই। সেটাই হয়েছে।
সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, খালেদা জিয়া সবসময় বলেছেন, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় বিএনপি নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সীমানা একটি ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের স্বার্থে নির্ধারণ করেছে, যা তাঁরা মানেন না। তাই তাঁরা চান, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়া হোক।
চস/স