জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (UNEP)- এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১.০৫ বিলিয়ন টন খাদ্য নষ্ট হয়। এটি গড়ে প্রতি ব্যক্তির জন্য বছরে ১৩২ কেজি। এর ৬০% অপচয় ঘরের স্তরে হয়, ২৮% রেস্তোরাঁ ও খাদ্য পরিষেবা খাতে এবং ১২% খুচরা পর্যায়ে। খাদ্য অপচয় বৈশ্বিক গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৮-১০% এর জন্য দায়ী। এটি পরিবেশের উপর বিশাল প্রভাব ফেলে এবং প্রায় বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ কৃষিজমি এই অপচয়ের ফলে অকার্যকর হয়ে পড়ছে।
খাদ্য অপচয়ের মারাত্মক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ঝিনাইদহ জেলায় “খাদ্য অপচয় প্রতিরোধে মিডিয়া অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন” আয়োজন করে।
ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ও রেস্তোরাঁ মালিক ও কর্মচারীদের মাঝে খাদ্য অপচয় কমানোর গুরুত্ব, এর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা এবং এটি হ্রাস করার জন্য কার্যকর কৌশল শিখিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করা।
ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মশালা এবং সেমিনার পরিচালনা করা হয়। সেমিনারের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্যাম্পেইনটি শুরু করেন ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাহিদ আক্তার। এছাড়াও ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ জেলার সিনিয়ার সাংবাদিক মিজানুর রহমান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাবিল খান এবং মিডিয়া ল্যাবের উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক।
খাদ্য অপচয়ের মারাত্মক প্রভাব সম্পর্কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাবিল খান বলেন, বর্তমান বিশ্বে খাদ্য অপচয় একটি বড় সংকট। খাদ্য অপচয়ের প্রভাব পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতিকর প্রভাবের বাইরে আমরা কেউই নেই। এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া যোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের মাস্টার্স প্রোগ্রামের একটি কোর্সের অ্যাসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে এই এডভোকেসি ক্যাম্পেইন আয়োজন করেছেন।
এছাড়াও ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাহিদ আক্তার আশ্বাস দেন, বিদ্যালয় থেকেই শুরু হবে খাদ্য অপচয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকা। আগামী প্রজন্মকে যেন আমরা একটি সুন্দর সমাজ গড়ে দিতে পারি যেখানে খাদ্যের প্রতি কোনো বৈষম্য থাকবে না, এমন সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকার জানান।
ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় অংশে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা রুফ র্যয়েল ক্যাফে এবং রেস্টুরেন্টে তাদের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের মাঝে খাদ্য অপচয়ের মারাত্মক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেমিনার পরিচালনা করে। এই সেমিনারেই রেস্টুরেন্টির ম্যানেজার অমিও হাসান শুভ খাদ্য অপচয় রোধে তাদের খাদ্য তালিকায় পরিমিত প্ল্যাটার চালু করার পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাস দেন।
চস/আজহার