দেশব্যাপী ২৪টি পৌরসভার নির্বাচনে আগের মতোই রক্তপাত ও ডাকাতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা অধিকাংশ পৌর নির্বাচনী এলাকায় তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে। সরকারের ‘হার্ড হিটিং’ ইমেজ বজায় রাখতে ভোটারসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চলছে। ’
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘খুলনার চালনা পৌরসভায় সকাল থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কুরুক্ষেত্র বানিয়ে রেখেছে। বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। তাদের ওপর করা হয়েছে পৈশাচিক আক্রমণ। কুড়িগ্রামে পৌর নির্বাচন ভোট শুরু হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে প্রশাসনের সহায়তায় দেদারসে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর পৌর নির্বাচনে সকাল থেকে থেকেই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে নিয়েছে। কুষ্টিয়ার খোকসা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। ’
তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহ জেলাধীন গফরগাঁও পৌর নির্বাচনে গত দুই রাত থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ হুমকি দিয়ে তাদের এলাকা ছাড়া করে দিয়েছে। সকাল থেকে সব ভোটকেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মারছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। মানিকগঞ্জ সদর পৌর নির্বাচনেও বিএনপির এজেন্ট বের করে দিয়ে সব কেন্দ্র দখল করেছে আওয়ামী লীগ। ’
রিজভী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন তারাবো পৌরসভা নির্বাচন আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী নাসির উদ্দিন বহু বাধা-বিপত্তি ও হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে গত ২০ ডিসেম্বর রিটার্নিং অফিসার বরাবর মনোনয়নপত্র জমা দেন। এরপর ২২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ধানের শীষের প্রার্থীর প্রস্তাবককে স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীর কর্মচারী হাবিবুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজিয়ে একই প্রস্তাবককে তার ভুয়া প্রস্তাবক বানিয়ে নাসির উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। কিন্তু সেসময় প্রস্তাবক দিলবার হোসেন নিজে উপস্থিত থেকে রিটার্নিং অফিসারকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘আমি শুধু ধানের শীষের প্রার্থী নাসির উদ্দিনের প্রস্তাবকারী। ’ কিন্তু রিটার্নিং অফিসার সেটি আমলে না নিয়ে নাসির উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন। এরপর থেকে ধানের শীষের প্রার্থীর প্রস্তাবকারী দিলবার হোসেনের ভাইকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী এ অমানবিক কাজের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় এমপি ও মন্ত্রীর স্ত্রী নৌকা মার্কার প্রার্থী, তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী করতেই এ ধরনের জালিয়াতি করা হচ্ছে। বিবেকহীন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পৌর নির্বাচন নিয়ে সরকারের হীন ইচ্ছাই প্রতিষ্ঠিত করছে। ’
চস/আজহার