দীর্ঘ পাঁচ মাস পর আগামী ১৭ আগস্ট থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে বান্দরবানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্টসহ সব পর্যটনকেন্দ্র। এ খবরে খুশি পর্যটনসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, করোনার প্রভাবে গত কয়েক মাসে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুরোপুরি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুললে পর্যটকরাও বেড়াতে আসতে শুরু করবেন।
এতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অন্তত তাদের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে পারবেন। একপর্যায়ে আবার চাঞ্চল্য ফিরে পাবে এখানকার পর্যটনশিল্প। বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শামীম হোসেন গতকাল রবিবার বলেন, কিছু শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে আগামী ১৭ আগস্ট থেকে পর্যটকদের জন্য পর্যটনকেন্দ্রসহ জেলার সব হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস খুলে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকরা পর্যটনকেন্দ্রগুলো ভ্রমণ করতে পারবেন। ব্যবসায়ীরা জানান, করোনা সংক্রণ প্রতিরোধে মার্চ মাস থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় জেলার সব আবাসিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, পরিবহন ও পর্যটনকেন্দ্র। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন পর্যটনসংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার মানুষ। ব্যবসায়ীসহ পর্যটন খাতে লোকসান হয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা।
পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ছোটবড় শতাধিক আবাসিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ২ হাজার শ্রমিক। জেলায় পর্যটকদের জন্য রয়েছে ৩ শতাধিক চাঁদের গাড়ি। এসব পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন ৫ শতাধিক শ্রমিক। লকডাউনের কারণে দীর্ঘ ৫ মাস তারা বেকার জীবনযাপন করেছেন। অনেকে জীবীকার তাগিদে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন হোটেল মালিকরাও। পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে হোটেল-রিসোর্টের অনেক জিনিস। ফানুস রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দীন বলেন, দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকায় কর্মচারীও বিদায় করে দিয়েছি। এতে সঠিক পরিচর্যার অভাবে হোটেলের অনেক আসবাব নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো আবার নতুন করে কিনতে হচ্ছে। প্রতিবছর বন্ধের সময় বান্দরবানে প্রচুর পর্যটক আসে। কিন্তু দুই ঈদে লকডাউন থাকার কারণে পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আসতে পারেননি। হোটেল-মোটেল বন্ধ থাকায় আমাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি আবারও পর্যটক আসবেন। আমরাও ব্যবসা করতে পারব।
বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৫ মাস পর পর্যটনকেন্দ্রসহ হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস খুলে দেওয়া হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্র খুললে আশা করি পর্যটকরা বেড়াতে আসবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তাদের দৈনন্দিন খরচগুলো অন্তত জোগাড় করতে পারবেন। তবে যে ক্ষতি হয়েছে সেটি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।
চস/আজহার